Skip to main content

বাড়ির ছাদে ফুলের বাগান – প্রস্তুতি, যত্ন ও করণীয়

বাড়ির ছাদে ফুলের বাগান – প্রস্তুতি, যত্ন ও করণীয়

বাড়ির ছাদে ফুলের বাগান – প্রস্তুতি, যত্ন ও করণীয়

শহুরে জীবনে বর্তমানে জায়গার অভাবে অনেকেই বাড়ির ছাদে বিভিন্ন ধরণের ফুল বাগান করে থাকেন। ফুল শুধু মাত্র তার রূপ দিয়ে মুগ্ধ করে না, সেই সাথে আমাদের দেয় অনাবিল মানসিক প্রশান্তি। ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ হয়তো পাওয়া যাবে না কোথাও। যাদের মনের কোনায় সুপ্ত বাসনা আছে একটা নিজের ফুলের বাগানের তারা ইচ্ছে করলে বাসার ছাদেই তৈরি করে নিতে পারেন নিজের ছোট্ট এক টুকরো বাগান। নিজের অবসর সময়টুকু আনন্দেই কাঁটিয়ে দিতে পারবেন আপনার নিজের বাগানে। ছাদে ফুলের বাগান করতে হলে দরকার হয় বিশেষ পরিচর্চার। ঠিকমতো ফুলের গাছের যত্ন নিলে আপনার ছোট্ট বাগানটিও ভরে উঠবে নানা ফুলের সমারোহে। চলুন ছাদে ফুলের বাগান করার পদ্ধতি, রীতি নীতি এবং আগে ও পরের যত্নের বিষয়গুলো জেনে নেই।
জায়গা নির্বাচন
ফুল গাছ গুলো রাখার জন্যে একটি রোদ্র উজ্জ্বল জায়গা নিবার্চন করতে হবে। সেটা ছাদ কিংবা আপনার প্রিয় ব্যালকনিও হতে পারে। একটু খেয়াল রাখতে হবে সেটা যেন অতিরিক্ত রোদ্র-স্থান না হয়, এবং সকাল বেলার রোদটা যেন থাকে, কারণ সেটা ফুলের গাছের জন্য খুব জরুরী।
টব নির্বাচন
ফুল গাছের জন্য বেশি বড় টবের প্রয়োজন হবে না। ফুল গাছের জন্য ৮-১৬ ইঞ্চি বা মাঝারি আকারের টব নিলেই চলবে। ছোট না বড় টব তা নির্ভর করবে ফুল গাছের আকার আকৃতির উপর। সাধারণত মৌসুমি ফুল গাছের জন্যে ১০-১২ ইঞ্চি টবই যথেষ্ট। কিন্ত যত বড় জায়গা হবে ততই গাছ প্রসারিত হতে পারবে এবং টবে অব্যশই পানি নিষ্কাসনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। 
ফুল গাছের জন্যে মাটি তৈরি
সবচেয়ে উত্তম মাটি হল দোঁ-আঁশ মাটি। দোঁ-আঁশ মাটিতেই ফুল বা ফলের গাছ সব চেয়ে ভালো হয়। গাছ লাগানোর আগে মাটিতে কম্পোস্ট সার বা পচা গোবর সার দিতে হবে। বিশেষ করে টবের ২-৩ সেঃ মিঃ উপরের দিকে। মাটি অবশ্যই ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি নার্সারি থেকে মাটি কেনা যায়।
ফুলের চারা গাছ
গাছ লাগানোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল চারা গাছ বাছাই করা। আপনি নার্সারি কিংবা ফুল গাছ বিক্রেতার কাছ থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। আপনি যার কাছ থেকেই গাছ সংগ্রহ করুন না কেন অবশ্যই খেয়াল করুন চারা গাছটি সুস্থ সবল কিনা। আর যদি আপনার কাছে গত বছরের বীচি থাকে তাহলে বীচি বুনেও চারা সংগ্রহ করতে পারেন। তাহলে অবশ্যই মৌসুম শুরু হবার ২ মাস আগে তা বুনতে হবে। তবে কিছু কিছু গাছের বীজ না বুনলেও চলে। যেমন চন্দ্রমল্লিকা গাছের শিকড় থেকে কান্ড বের হয়ে চারা তৈরি হয়। আবার বৃষ্টির সময় গাঁদা ফুলের ডাল কেটে মাটিতে পুঁতলেও চারা তৈরি হয়।
ফুলের গাছের যত্নঃ পানি বা সেচ
গাছে নিয়মিত প্রতিদিন পানি দিতে হবে। যারা দু বেলা পানি দিতে চান, খেয়াল রাখবেন গাছের গোড়ায় যেন পানি না জমে যায়। আর সপ্তাহে এক দিন গাছের পাতায় পানি স্প্রে করতে হবে। গাছের গোড়ায় এমন ভাবে পানি দিতে হবে যেন গোড়ার মাটি না ধুয়ে যায়। তাই সম্ভব হলে ঝাঝরির মাধ্যমে পানি দিন। মাটি যেন সব সময় ভেজা থাকে। যদি গাছ হেলে পড়ে তাহলে অবশ্যই গাছের সাথে শক্ত কোনো ডাল বা কাঠি বেঁধে দিবেন।
ফুলের গাছের যত্নঃ সার
গাছে সার দিতে হবে খুব সাবধানে কারণ একটু এদিক ওদিক হলেই গাছ মারা যেতে পারে। আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা সার দিচ্ছি একটি টবের ভিতর আর জায়গাটা খুব ছোট। তাই একটি টবের জন্য এক মুঠো সার যথেষ্ট। গাছের গোড়ায় কখনো সার দেওয়া যাবে না সার দিতে হবে গাছের গোড়া থেকে ৪-৫ সেঃ মিঃ দূরে। আর সার হতে হবে মিশ্র সার বা তার চেয়ে ভালো হয় যদি গোবর সার দেওয়া যায়। কিন্তু গোবর সার শুকিয়ে গুঁড়ো করে মাটির সাথে মিলিয়ে দিতে হবে। কেউ যদি চান তাহলে সবজির ছোলা পঁচিয়ে জৈব সার তৈরি করে নিতে পারেন সেটাও গাছের জন্য খুব ভালো। গাছ পরিপক্ক হলে বা ফুল আসার ২-৩ সপ্তাহ আগে সার দিতে হবে।
ফুলের সময়
আপনাকে আগে ঠিক করতে হবে যে আপনি ফুল বড় চান নাকি অনেক ফুল চান। যদি আপনি বেশি ফুল চান তাহলে গাছ যখন ২০-২৫ সেঃ মেঃ হবে তখন থেকে গাছের আগা অল্প অল্প করে ছাঁটা শুরু করতে হবে। আর যদি বড় ফুল চান তাহলে গাছে কুঁড়ি আসার পর কিছু কুঁড়ি কেটে ফেলতে হবে।
পোকা মাকড় থেকে সুরক্ষা
গাছে যদি কোনো পোকা মাকরের উপদ্রব হয় তাহলে আক্রান্ত পাতা, ফুল বা ডাল কেটে ফেলতে হবে। আর সম্পূর্ণ গাছে সাবান পানি স্প্রে করতে হবে। তাহলে অনেকটা পোকা মাকড় থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। তো আজ থেকেই শুরু করে ফেলুন আপনার বাড়িতে ছোট্ট একটি বাগান।
(কৃতজ্ঞতাঃ জুঁই শতাব্দী)
শেয়ার করুন সবার সাথেঃ

Comments

Popular posts from this blog

রহস্যময় ডার্ক ম্যাটার (Dark Matter)!!

রহস্যময় ডার্ক ম্যাটার(Dark matter) ! লিখেছেন : হিমাংশু কর সেপ্টেম্বর 26, 2018 সৃষ্টিতত্ত (cosmology) ও মহাবিশ্বের দুরতম অঞ্চলগুলো সম্পর্কে আমরা খুব কমই জানতে পেরেছি।এর পেছনে সবচেয়ে বড় কারন হল আমাদের প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা।এ ছাড়াও আলোর গতির সীমাবদ্ধতার কারনেও আমরা এ সকল অঞ্চলগুলো সম্পর্কে এখনো ভাল মত জানি না।তবে আমাদের অর্জন ও কম না।আমরা ইতিমধেই আন্তঃনাক্ষত্রিক মহাকাশ অভিযান এর জন্য প্রস্তুত হতে পেরেছি।এও বা কম কি?তবে যাই হোক সে আলোচনা আর বাড়াবো না।এবার আমরা লক্ষ করব গ্যালাক্সিগুলোর দিকে।নিউটনের মহাকর্ষ বলের( gravitational force ) সুত্রগুলি যদি আমারা গ্যালাক্সিগুলোর উপর প্রয়োগ করি , তাহলে দেখা যাবে যে, গ্যালাক্সিগুলোর চারিদিকে ছরিয়ে ছিটিয়ে পরার কথা।কিন্তু আমরা জানি গ্যালাক্সি বা তারকাপুঞ্জের ভেতরের বস্তুগুল একটি কেন্দ্রিয় বিন্দুর উপর নির্ভর করে ঘুরতেছে।কারন তাদের পারস্পারিক আকর্ষণ এক ধরনের কন্দ্রাতিক(centripetal) শক্তির সৃষ্টি করে থাকে।অবাক হবার কথা হল হিসাব করে দেখা গেছে এ ধরনের ঘূর্ণন সৃষ্টি করার মত পর্যাপ্ত বস্তু এসব গ্যালাক্সিগুলোর নেই।এই ব্যাপারটি ১৯৭০ এর দশকে ওয়াশিংটন ডি...

বাঘ ও হরিণ: শিক্ষামূলক গল্

বাঘ ও হরিণ: শিক্ষামূলক গল্প - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - এক বনে ছিল এক হিংস্র বাঘ। সে যেকোনো প্রাণীকে দেখলেই ঝাপিয়ে পড়তো। কাউকে সে মানতো না। একদিন এক নিরীহ হরিণ সেই বাঘের কবলে পড়লো। হরিণটা অনেক যুদ্ধ করেও পালাতে পারলো না। বাঘ মাত্র ওকে সুবিধামতো কামড় বসাবে। এমন সময় হরিণের মাথায় একটা বুদ্ধি আসল। হরিণ বলল, “ওহে বাঘ। তুমিতো সবাইকেই খাও। আমায় না হয় ছেড়ে দাও। আমার মাংস খেলে তোমার একটুও পেট ভরবে না। তার চেয়ে বরং বিনিময়ে আমি তোমাকে অনেকগুলো গরু দিবো। তা দিয়ে এক মাস চলে যাবে তোমার।” বাঘ কথাটা শুনে ভেবে দেখল কথাটাতো মন্দ না। তাই সে হরিণটাকে ছেড়ে দিল। পরে হরিণ চলে গেল সেখান থেকে। আর বাঘ তার জন্য অপেক্ষা করতে লাগল। কিন্তু চালাক হরিণকে আর পায় কে? হরিণতো তার উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে জীবনে রক্ষা পেল। তাই গায়ের জোর না থাকলেও বুদ্ধির জোর সবচেয়ে দামি। এই গল্প থেকে আমরা অনেকগুলো শিক্ষা নিতে পারি: 1। কাউকে সহজেই বিশ্বাস করা ঠিক না। সহজেই বিশ্বাস করাটা বোকামি। 2। বিপদে পড়লে ভয় না পেয়ে বরং ভয়টাকে জয় করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। 3। গায়ের শক্তি না থাকলেও বুদ্ধির জোর দিয়ে ...

বাসর রাত- ভালোবাসার গল্প

বাসর রাত সেপ্টেম্বর 25, 2018 গল্প লিখেছেন :  কাল্পনিক বাসর ঘরে ঢুকেই নববধূকে বললাম ‘ ফ্রেশ হয়ে আস। মুখের আটা-ময়দা দেখে বলতে পারবনা তুমি চাঁদের মত সুন্দর’ নববধূ আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকাল। তারপর বলল ‘বিয়ের আগে আমাকে দেখেননি?’ আমি মুখ বাঁকা করে বললাম ‘হ্যাঁ একবার তো দেখেছিলাম কিন্তু সেদিন আরো বেশি আটা-ময়দা ছিল’ নববধূ আমার দিকে যেভাবে তাকাল মনে হচ্ছে আমাকে চিবিয়ে খাবে। তারপর খাট থেকে উঠে ফ্রেশ হতে যাবার জন্য পা বাড়াল। আমি বললাম ‘তোমার নামটা যেন কি?’ নববধূ ভেংচি দিয়ে বলল ‘বাহ মাত্র একদিনে নামটাই ভুলে গেলেন? কালকে তো মনে হয় বলবেন “এই মেয়ে তুমি এ বাড়িতে কি কর” ‘ আমি জোর স্বরে বললাম ‘নামটা জিজ্ঞেস করেছি আর এত কথা শুনিয়ে দিলে। এত বেশি কথা মেয়েদের মুখে মানায় না।’ নববধূ ‘ইরা’ বলেই ফ্রেশ হতে চলে গেল। . আমি বসেবসে হাসছি। আয়নার সামনে গিয়ে হাসছি। এরকম যন্ত্রণা মনে হয় বাসর রাতে কোন মেয়ে পায়নি। ফ্রেশ হয়ে প্যারা ঘরে আবার আসল। এবার চোখেমুখে লজ্জা দেখতে পাচ্ছি। আটা-ময়দা ছাড়া তো ভালই দেখাচ্ছে। গাল ফুলিয়ে বসে আছে। চোখ দিয়ে পানি ঝরবে মনে হয়। আমি বললাম ‘মিসেস প্যারা আপনাকে আটা-ময়দা ছ...