Skip to main content

মাথাব্যথা ও ঘুম না হওয়ার সমস্যা দূর করতে দুধ ও মধুর মিশ্রণ


মাথাব্যথা ও ঘুম না হওয়ার সমস্যা দূর করতে দুধ ও মধুর মিশ্রণ



দুইটা সমস্যায় আমজাদ ভাই অনেক দিন যাবত ভুগছেন। একঃ মাথাব্যথা । দুইঃ রাতে ঘুম কম হওয়া। আমজাদ ভাই সেলস এর চাকরি করেন, সারাদিন ঢাকার অনেক দৌড়-ঝাঁপ করতে হয়। রাতের বেলা বাসায় ফিরতেই খুব মাথাব্যাথা করতে থাকে। তাছাড়া ঘুমও আসতে চায় না! অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকার পর সামান্য ঘুম হয়, আর সকালে উঠেই বেড়িয়ে পড়েন জীবিকার সংগ্রামে। এই সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য অনেক ঔষধ খেয়েছেন তিনি। খুব একটা ফল হয়নি। বরং ঔষধের সাইড ইফেক্টে আরও নানান জটিলতায় ভুগছেন এখন।
তবে আশার কথা হচ্ছে- আমজাদ ভাই কিছুদিন আগে একজন বিদেশী স্বাস্থ্যবিদের সাথে সাক্ষাত করে এই সমস্যার একটা সহজ সমাধান পেয়েছেন। এখন আর তেমন মাথাব্যথা করে না তার, রাতে ঘুমও ভালো হয়! আমজাদ ভাইকে জিজ্ঞেস করেছিলাম- কীভাবে এই দীর্ঘদিনের জটিলতা দূর হলো আপনার? উত্তরে আমজাদ ভাই হাসলেন খুব সুন্দর করে। তারপর আমাকে শেখালেন হাতের নাগালে থাকা দুইটি খাবার দিয়ে কীভাবে ঘুম না হওয়া সমস্যার সহজ সমাধান করা সম্ভব! এই খাবার দুটি হচ্ছে দুধ এবং মধু। এবার সেই সমাধানটি আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব-

মাথাব্যথা ও ঘুম না হওয়ার সমস্যা দূর করতে দুধ ও মধুর মিশ্রণ

মধুর নানান উপকারিতার কথা তো আমরা সকলেই জানি। সেই সাথে জানি নিয়মিত দুধ খাওয়ার হাজার উপকারিতার কথাও। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছি- দুধ ও মধু একসাথে মিশিয়ে খেলে কি কি উপকার হতে পারে?
মাথা ব্যথা করলে আমরা কত ধরণের ঔষধ খাই, অথচ এই মধু ও দুধের মিশ্রণ খুব সহজেই সাধারণ মাথা ব্যথা দূর করে দিতে পারে। তাছাড়া যাদের রাতে ঠিক মতো ঘুম হয় না, দেখা যায় ঘুমের ঔষধ ছাড়া ঘুম আসে না, তাদের জন্যেও এই মিশ্রণ খুব উপকারী। শুধু কি তাই? এই মিশ্রণ আরও অনেক ধরণের শারীরিক জটিলতা দূর করতে সক্ষম। চলুন- এক নজরে দেখে নেওয়া যাক মধু ও দুধ একসাথে মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতার কথা!

দুধ ও মধুর মিশ্রণ কীভাবে তৈরি করবেন?

এবার মাথাব্যথা দূর করতে এবং রাতে ঘুম আনতে দুধ ও মধু একসাথে কীভাবে খাবেন তা এবার জেনে নিন-
একটি পাত্রে এক গ্লাস পরিমান দুধ নিন। অল্প আচে দুধ গরম করুন। গরম হওয়ার পর দুধটুকু একটি গ্লাসে ঢেলে নিন। তারপর দুই চামচ খাঁটি মধু দিন গ্লাসে। ভালো করে চামচ দিয়ে নেড়ে মধু মিশিয়ে নিন দুধের সাথে। মেশানো হয়ে গেলে গরম গরম খেয়ে ফেলুন। খাওয়ার পর কিছুক্ষন লাইট নিভিয়ে দিয়ে বিছানায় শুয়ে চোখ বন্ধ করে রেস্ট নিন। দেখবেন যে মাথাব্যথা হওয়ার অনুভুতি ধীরে ধীরে কেটে যাবে, সুন্দর একটা ঘুম হবে এবং সকালে ঘুম থেকে উঠে একদম ফ্রেশ লাগবে নিজেকে।
তবে এই পদ্ধতিতেই দুধ ও মধুর মিশ্রণ খেতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। আপনি চাইলে আরও অনেক ভাবেই দুধের সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। যেভাবেই খান না কেন, চেষ্টা করবেন গরম গরম খেতে। সবচেয়ে ভালো হয় রাতে খাওয়া দাওয়ার পর ঠিক শোয়ার আগে এই মিশ্রণ খেলে। তাহলে সবচেয়ে ভাল ফল পাবেন।
শুধু যে দুধ ও মধুর এই মিশ্রণ আমাদের ঘুম না হওয়ার সমস্যা দূর করতে পারে, তা কিন্তু নয়! এই খাবার নিয়মিত খেলে আরও অনেক ধরণের শারীরিক সমস্যা থেকে বাঁচা যায়। এবার আসুন জেনে নেই দুধ ও মধু এক সাথে মিশিয়ে খাওয়ার অন্যান্য উপকারিতা সম্পর্কেঃ

দুধ ও মধু একত্রে মিশিয়ে খাওয়ার উপকারিতাঃ

দুধ ও মধুর মিশ্রণ অনন্য সাধারণ স্বাস্থ্যকর একটি খাদ্য। বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ শরীরের হাজারো উপকার পাওয়া যায় এই মধু ও দুধ একসাথে মিশিয়ে খেলে। বিভিন্ন রোগ নিরাময়কারী হিসেবে বহুকাল আগে থেকেই দুধের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খাওয়ার প্রচলন চলে আসছে। মধুর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাংগাল উপাদান। দুধের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ, বি, ডি। রয়েছে ক্যালসিয়াম, প্রাণিজ প্রোটিন ও ল্যাকটিক অ্যাসিড। দুধ ও মধু যখন একসঙ্গে মেশানো হয়, এটি আরো স্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে।

ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধিতে

মধু ও দুধ, উভয়ের মধ্যেই বিভিন্ন অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল উপাদান বিদ্যমান রয়েছে যা ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। মধু, দুধ ও পানির মিশ্রণ অনেক নামকরা স্পাতে ত্বকের যত্নে ব্যবহার করা হয়।

আদর্শ হজমকারক হিসেবে

মধু ও দুধের মিশ্রণ হজমের ক্ষেত্রে অনেক উপকারী। আপনার যদি হজমে সমস্যা হয় বা পেট ফুলে থাকে তবে গরম দুধ এবং মধু মিশিয়ে পান করুন। এটি পেটের গ্যাস দূর করে পেট ব্যথা কমিয়ে দিবে। প্রিবায়োটিক উপাদানের উৎপাদক হিসেবে প্রসিদ্ধ মধু। শরীরের অন্ত্রে প্রিবায়োটিকের উৎপাদন বাড়িয়ে হজমশক্তি বৃদ্ধি করে। অন্যদিকে বিফিডোব্যাক্টেরিয়া নামক প্রোবায়োটিক পাওয়া যায় দুধে। এই প্রোবায়োটিক অন্ত্রে প্রিবায়োটিক উৎপাদনে সাহায্য করে ও হজমশক্তি বাড়ায়।

শক্তি ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে

দুধের মধ্যে রয়েছে হাজারো প্রোটিনের সমাহার, আর মধু সাধারণত শর্করার আদর্শ একটা মাধ্যম। তাই মধু ও দুধের মিশ্রণ প্রতিদিন সকালে সেবন করলে দেহের মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায়, ফলে শক্তি বাড়ার সম্ভাবনা থাকে অনেক।

হাড়ের গঠন ও হাড়ের শক্তি বৃদ্ধিতে

দুধ ও মধুর মধ্যে বিদ্যমান ক্যালসিয়াম হাড় গঠন ও হাড় শক্ত করার ব্যাপারে অনেক সহায়তা করে।

অনিদ্রাজনিত রোগবালাই নিরাময়ে

অনেকের রাতে ভালো ঘুম আসে না। প্রাচীন যুগ থেকে সেই সমস্যার মোকাবিলা করতে সাহায্য করে এসেছে দুধ-মধু। এর মিশ্রণ শরীরকে শিথিল করে দু’চোখের পাতায় ঘুম এনে দেয়। রাতে খাবার পর ঘুমের আগে মধু ও দুধের মিশ্রণ সেবন করলে অনেক ভালো ঘুম হয়, অনিদ্রাজনিত সকল সমস্যার সমাধান হয়।
দ্রুত বার্ধক্যের আগমন রোধে
তারুণ্য ধরে রাখতে চান? তাহলে প্রতিদিন গরম দুধ এবং মধু পান করুন। গরম দুধ এবং মধুকে “জীবনী সুধা” বলা হয়। গ্রিক, রোমান, মিশরীয় এবং অনেক ভারতীয়দের তারুণ্য ধরে রাখার জন্য নিয়মিত গরম দুধ এবং মধু পান করতেন। শুধু তাই নয় এটি আপনাকে দীর্ঘায়ু করতে সাহায্য করে। রাতে শুতে যাওয়ার ঠিক আগে একগ্লাস গরম দুধে এক চামচ মধু ফিরিয়ে দেবে আপনার হারিয়ে যাওয়া রূপ, লাবণ্য, সুস্বাস্থ্য।

দুধ ও মধুর মিশ্রণের অন্যান্য ব্যবহার

শুধু যে খাদ্য হিসেবে দুধ ও মধুর মিশ্রণ উপকারী, তা কিন্তু নয়। দুধ ও মধু মিশিয়ে ফেস ওয়াস, ফেস মাস্ক, চুলের উপটান ইত্যাদি তৈরি করা যায়। এমনকি দারুণ এক প্রাকৃতিক ঘুমের ওষুধ তৈরি করা যায় এই মিশ্রণ দ্বারা।
-----------সংগৃহীত।
আরও পড়ুন ঃ এন্টিবায়েটিক সেবনে সতর্কতা। ttps://wowmizing.blogspot.com/2018/09/blog-post_5.html
ওজন কমাতে খালিপেটে খেতে হবে এই 20টি খাবার। https://wowmizing.blogspot.com/2018/09/blog-post_61.html
আপনার লিভার ভালো নেই, বুঝবেন যেই লক্ষনগুলো দেখে। https://wowmizing.blogspot.com/2018/09/blog-post_47.html
বিনা অপারেশনে গলবে কিডনির পাথর। https://wowmizing.blogspot.com/2018/09/blog-post_41.html
আঙ্গুল ছুঁলেই বুঝে যাবেন, হার্ট এর রোগে আক্রান্ত কিনা? https://wowmizing.blogspot.com/2018/09/blog-post_90.html

Comments

Popular posts from this blog

রহস্যময় ডার্ক ম্যাটার (Dark Matter)!!

রহস্যময় ডার্ক ম্যাটার(Dark matter) ! লিখেছেন : হিমাংশু কর সেপ্টেম্বর 26, 2018 সৃষ্টিতত্ত (cosmology) ও মহাবিশ্বের দুরতম অঞ্চলগুলো সম্পর্কে আমরা খুব কমই জানতে পেরেছি।এর পেছনে সবচেয়ে বড় কারন হল আমাদের প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা।এ ছাড়াও আলোর গতির সীমাবদ্ধতার কারনেও আমরা এ সকল অঞ্চলগুলো সম্পর্কে এখনো ভাল মত জানি না।তবে আমাদের অর্জন ও কম না।আমরা ইতিমধেই আন্তঃনাক্ষত্রিক মহাকাশ অভিযান এর জন্য প্রস্তুত হতে পেরেছি।এও বা কম কি?তবে যাই হোক সে আলোচনা আর বাড়াবো না।এবার আমরা লক্ষ করব গ্যালাক্সিগুলোর দিকে।নিউটনের মহাকর্ষ বলের( gravitational force ) সুত্রগুলি যদি আমারা গ্যালাক্সিগুলোর উপর প্রয়োগ করি , তাহলে দেখা যাবে যে, গ্যালাক্সিগুলোর চারিদিকে ছরিয়ে ছিটিয়ে পরার কথা।কিন্তু আমরা জানি গ্যালাক্সি বা তারকাপুঞ্জের ভেতরের বস্তুগুল একটি কেন্দ্রিয় বিন্দুর উপর নির্ভর করে ঘুরতেছে।কারন তাদের পারস্পারিক আকর্ষণ এক ধরনের কন্দ্রাতিক(centripetal) শক্তির সৃষ্টি করে থাকে।অবাক হবার কথা হল হিসাব করে দেখা গেছে এ ধরনের ঘূর্ণন সৃষ্টি করার মত পর্যাপ্ত বস্তু এসব গ্যালাক্সিগুলোর নেই।এই ব্যাপারটি ১৯৭০ এর দশকে ওয়াশিংটন ডি...

বাঘ ও হরিণ: শিক্ষামূলক গল্

বাঘ ও হরিণ: শিক্ষামূলক গল্প - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - এক বনে ছিল এক হিংস্র বাঘ। সে যেকোনো প্রাণীকে দেখলেই ঝাপিয়ে পড়তো। কাউকে সে মানতো না। একদিন এক নিরীহ হরিণ সেই বাঘের কবলে পড়লো। হরিণটা অনেক যুদ্ধ করেও পালাতে পারলো না। বাঘ মাত্র ওকে সুবিধামতো কামড় বসাবে। এমন সময় হরিণের মাথায় একটা বুদ্ধি আসল। হরিণ বলল, “ওহে বাঘ। তুমিতো সবাইকেই খাও। আমায় না হয় ছেড়ে দাও। আমার মাংস খেলে তোমার একটুও পেট ভরবে না। তার চেয়ে বরং বিনিময়ে আমি তোমাকে অনেকগুলো গরু দিবো। তা দিয়ে এক মাস চলে যাবে তোমার।” বাঘ কথাটা শুনে ভেবে দেখল কথাটাতো মন্দ না। তাই সে হরিণটাকে ছেড়ে দিল। পরে হরিণ চলে গেল সেখান থেকে। আর বাঘ তার জন্য অপেক্ষা করতে লাগল। কিন্তু চালাক হরিণকে আর পায় কে? হরিণতো তার উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে জীবনে রক্ষা পেল। তাই গায়ের জোর না থাকলেও বুদ্ধির জোর সবচেয়ে দামি। এই গল্প থেকে আমরা অনেকগুলো শিক্ষা নিতে পারি: 1। কাউকে সহজেই বিশ্বাস করা ঠিক না। সহজেই বিশ্বাস করাটা বোকামি। 2। বিপদে পড়লে ভয় না পেয়ে বরং ভয়টাকে জয় করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। 3। গায়ের শক্তি না থাকলেও বুদ্ধির জোর দিয়ে ...

বাসর রাত- ভালোবাসার গল্প

বাসর রাত সেপ্টেম্বর 25, 2018 গল্প লিখেছেন :  কাল্পনিক বাসর ঘরে ঢুকেই নববধূকে বললাম ‘ ফ্রেশ হয়ে আস। মুখের আটা-ময়দা দেখে বলতে পারবনা তুমি চাঁদের মত সুন্দর’ নববধূ আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকাল। তারপর বলল ‘বিয়ের আগে আমাকে দেখেননি?’ আমি মুখ বাঁকা করে বললাম ‘হ্যাঁ একবার তো দেখেছিলাম কিন্তু সেদিন আরো বেশি আটা-ময়দা ছিল’ নববধূ আমার দিকে যেভাবে তাকাল মনে হচ্ছে আমাকে চিবিয়ে খাবে। তারপর খাট থেকে উঠে ফ্রেশ হতে যাবার জন্য পা বাড়াল। আমি বললাম ‘তোমার নামটা যেন কি?’ নববধূ ভেংচি দিয়ে বলল ‘বাহ মাত্র একদিনে নামটাই ভুলে গেলেন? কালকে তো মনে হয় বলবেন “এই মেয়ে তুমি এ বাড়িতে কি কর” ‘ আমি জোর স্বরে বললাম ‘নামটা জিজ্ঞেস করেছি আর এত কথা শুনিয়ে দিলে। এত বেশি কথা মেয়েদের মুখে মানায় না।’ নববধূ ‘ইরা’ বলেই ফ্রেশ হতে চলে গেল। . আমি বসেবসে হাসছি। আয়নার সামনে গিয়ে হাসছি। এরকম যন্ত্রণা মনে হয় বাসর রাতে কোন মেয়ে পায়নি। ফ্রেশ হয়ে প্যারা ঘরে আবার আসল। এবার চোখেমুখে লজ্জা দেখতে পাচ্ছি। আটা-ময়দা ছাড়া তো ভালই দেখাচ্ছে। গাল ফুলিয়ে বসে আছে। চোখ দিয়ে পানি ঝরবে মনে হয়। আমি বললাম ‘মিসেস প্যারা আপনাকে আটা-ময়দা ছ...