Skip to main content

পেয়াজ কাটলে চোখ জ্বলে কেন?

পেয়াজ কাটলে চোখ জ্বলে কেন?



রান্নার ক্ষেত্রে মসলা হিসেবে পেয়াজের রয়েছে বিশেষ উপযোগিতা। রান্না করার সময় বিশ্বের প্রায় সকল দেশের মানুষেরাই পেয়াজ ব্যবহার করে থাকে। মুখ রোচক রসনা পণ্য ছাড়াও পেয়াজের রয়েছে বিভিন্ন ঔষধি গুনও। সবার কাছে সমাদৃত এইপণ্যটির একটি বিশেষ অসুবিধা রয়েছে। যারা নিয়মিত পেয়াজ কাটেন বা জীবনে একবার হলেও পেয়াজ কেটেছেন তারা পেয়াজের এই বিশেষ অসুবিধা সম্পর্কে জানেন।

হ্যাঁ, পেয়াজ কাটার সেই সমস্যাটি হচ্ছে, পেয়াজ কাটার সময় চোখ জ্বালা-পোড়া করে ও চোখে পানি আসে। পেয়াজ কাটলে কেন এমন হয় সেটা সবার কাছে একটি কৌতূহলের বিষয়। আসুন আজ আমরা জানি পেয়াজ কাটলে কেন এমন হয়। 
মূলত পেয়াজ কাটার সময় এক বিশেষ ধরনের এসিডের কারণে এমনটি হয়। পিয়াজের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণে এমিনো এসিড। এই এসিডে সাধারণভাবে চোখ জ্বালা পোড়া করার কথা নয়। তবে  পেয়াজ কাটার সময় এই এমিনো এসিডেরসালফোক্সাইড উপাদানটি বিক্রিয়া করে সালফিনিক এসিডে পরিবর্তিত হয়। যেটি চোখ জ্বালা-পোড়া করার কাজে সহায়ক। পিয়াজের মধ্যে আরও এক ধরনের এনজাইম পদার্থ থাকে যা এই সালফিনিক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে প্রোপেন থায়োল এস-আক্সাইড তৈরি করে। এই এসিডটি আবার দ্রুত উড়ে গিয়ে চোখের পানির সাথে মিশে যায়, তারপর এটি চোখের পানির সাথে মিশে সালফিউরিক এসিড তৈরি করে। এই সালফিউরিক এসিডিই চোখ জ্বালা-পোড়া করা এবং চোখে পানি আনার মতো কাজ করে থাকে। চোখে যখন পেয়াজ কাটার সময়সালফিউরিক এসিড এসে পড়ে তখন সেটি ধুয়ে ফেলার জন্যই অতিরিক্ত পানি নিঃসৃত হয় চোখে। এর মাধ্যমে চোখ হয়ে পড়ে অশ্রু মণ্ডিত
পেয়াজ কাটার সময় চোখ জ্বালা-পোড়া করার এই অসুবিধা থেকে মুক্ত থাকা কষ্টকর। তবে কয়েকটি ব্যবস্থার মাধ্যমে এই অসুবিধা থেকে কিছুটা হলেও আরাম পাওয়া যায়।
পেয়াজ কাটার আগে পেয়াজ অনেকক্ষণ ফ্রিজে রাখলে চোখে জ্বালা-পোড়াও হয় না। কারণ, কম তাপমাত্রার কারণে উল্লেখিতউপাদানগুলোর কার্যকারিতা কমে যায় এবং প্রোপেন থায়োল এস-আক্সাইড তৈরি হয় না। আরেকটি পদ্ধতি হিসেবে বলা যায়, পেয়াজ অর্ধেক করে কেটে গরম পানিতে কিছুক্ষণ রেখে তারপরে কাটলে চোখের জ্বালা পোড়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।কারণ, পেয়াজে সালফিউরিক এসিড তৈরি হলেও তা পানিতে দ্রবণীয় হয়ে যায় ফলে তা চোখে আসার কোন সুযোগ থাকে নাএবং উচ্চ তাপমাত্রার কারণে অধিকাংশ এমিনো এসিডের সালফোক্সাইড ও এনজাইম পেয়াজ থেকে নিঃসৃত হয়ে পানিতেদ্রবীভূত হয়ে যায় ফলে প্রোপেন থায়োল এস-আক্সাইড চোখে আসার কোন সুযোগ থাকে না।
পেয়াজ কাটার ফলে চোখ জ্বালা-পোড়া করা একটি স্বাভাবিক বিষয়। তবে বেশী পেয়াজ কাটার ক্ষেত্রে একটু বুদ্ধির আশ্রয় নিলে চোখ জ্বালা-পোড়া করার অত্যাচার থেকে মুক্ত থাকা যায়।

------------সংগ্রহকৃত

Comments

Popular posts from this blog

রহস্যময় ডার্ক ম্যাটার (Dark Matter)!!

রহস্যময় ডার্ক ম্যাটার(Dark matter) ! লিখেছেন : হিমাংশু কর সেপ্টেম্বর 26, 2018 সৃষ্টিতত্ত (cosmology) ও মহাবিশ্বের দুরতম অঞ্চলগুলো সম্পর্কে আমরা খুব কমই জানতে পেরেছি।এর পেছনে সবচেয়ে বড় কারন হল আমাদের প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা।এ ছাড়াও আলোর গতির সীমাবদ্ধতার কারনেও আমরা এ সকল অঞ্চলগুলো সম্পর্কে এখনো ভাল মত জানি না।তবে আমাদের অর্জন ও কম না।আমরা ইতিমধেই আন্তঃনাক্ষত্রিক মহাকাশ অভিযান এর জন্য প্রস্তুত হতে পেরেছি।এও বা কম কি?তবে যাই হোক সে আলোচনা আর বাড়াবো না।এবার আমরা লক্ষ করব গ্যালাক্সিগুলোর দিকে।নিউটনের মহাকর্ষ বলের( gravitational force ) সুত্রগুলি যদি আমারা গ্যালাক্সিগুলোর উপর প্রয়োগ করি , তাহলে দেখা যাবে যে, গ্যালাক্সিগুলোর চারিদিকে ছরিয়ে ছিটিয়ে পরার কথা।কিন্তু আমরা জানি গ্যালাক্সি বা তারকাপুঞ্জের ভেতরের বস্তুগুল একটি কেন্দ্রিয় বিন্দুর উপর নির্ভর করে ঘুরতেছে।কারন তাদের পারস্পারিক আকর্ষণ এক ধরনের কন্দ্রাতিক(centripetal) শক্তির সৃষ্টি করে থাকে।অবাক হবার কথা হল হিসাব করে দেখা গেছে এ ধরনের ঘূর্ণন সৃষ্টি করার মত পর্যাপ্ত বস্তু এসব গ্যালাক্সিগুলোর নেই।এই ব্যাপারটি ১৯৭০ এর দশকে ওয়াশিংটন ডি...

বাঘ ও হরিণ: শিক্ষামূলক গল্

বাঘ ও হরিণ: শিক্ষামূলক গল্প - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - এক বনে ছিল এক হিংস্র বাঘ। সে যেকোনো প্রাণীকে দেখলেই ঝাপিয়ে পড়তো। কাউকে সে মানতো না। একদিন এক নিরীহ হরিণ সেই বাঘের কবলে পড়লো। হরিণটা অনেক যুদ্ধ করেও পালাতে পারলো না। বাঘ মাত্র ওকে সুবিধামতো কামড় বসাবে। এমন সময় হরিণের মাথায় একটা বুদ্ধি আসল। হরিণ বলল, “ওহে বাঘ। তুমিতো সবাইকেই খাও। আমায় না হয় ছেড়ে দাও। আমার মাংস খেলে তোমার একটুও পেট ভরবে না। তার চেয়ে বরং বিনিময়ে আমি তোমাকে অনেকগুলো গরু দিবো। তা দিয়ে এক মাস চলে যাবে তোমার।” বাঘ কথাটা শুনে ভেবে দেখল কথাটাতো মন্দ না। তাই সে হরিণটাকে ছেড়ে দিল। পরে হরিণ চলে গেল সেখান থেকে। আর বাঘ তার জন্য অপেক্ষা করতে লাগল। কিন্তু চালাক হরিণকে আর পায় কে? হরিণতো তার উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে জীবনে রক্ষা পেল। তাই গায়ের জোর না থাকলেও বুদ্ধির জোর সবচেয়ে দামি। এই গল্প থেকে আমরা অনেকগুলো শিক্ষা নিতে পারি: 1। কাউকে সহজেই বিশ্বাস করা ঠিক না। সহজেই বিশ্বাস করাটা বোকামি। 2। বিপদে পড়লে ভয় না পেয়ে বরং ভয়টাকে জয় করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। 3। গায়ের শক্তি না থাকলেও বুদ্ধির জোর দিয়ে ...

বাসর রাত- ভালোবাসার গল্প

বাসর রাত সেপ্টেম্বর 25, 2018 গল্প লিখেছেন :  কাল্পনিক বাসর ঘরে ঢুকেই নববধূকে বললাম ‘ ফ্রেশ হয়ে আস। মুখের আটা-ময়দা দেখে বলতে পারবনা তুমি চাঁদের মত সুন্দর’ নববধূ আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকাল। তারপর বলল ‘বিয়ের আগে আমাকে দেখেননি?’ আমি মুখ বাঁকা করে বললাম ‘হ্যাঁ একবার তো দেখেছিলাম কিন্তু সেদিন আরো বেশি আটা-ময়দা ছিল’ নববধূ আমার দিকে যেভাবে তাকাল মনে হচ্ছে আমাকে চিবিয়ে খাবে। তারপর খাট থেকে উঠে ফ্রেশ হতে যাবার জন্য পা বাড়াল। আমি বললাম ‘তোমার নামটা যেন কি?’ নববধূ ভেংচি দিয়ে বলল ‘বাহ মাত্র একদিনে নামটাই ভুলে গেলেন? কালকে তো মনে হয় বলবেন “এই মেয়ে তুমি এ বাড়িতে কি কর” ‘ আমি জোর স্বরে বললাম ‘নামটা জিজ্ঞেস করেছি আর এত কথা শুনিয়ে দিলে। এত বেশি কথা মেয়েদের মুখে মানায় না।’ নববধূ ‘ইরা’ বলেই ফ্রেশ হতে চলে গেল। . আমি বসেবসে হাসছি। আয়নার সামনে গিয়ে হাসছি। এরকম যন্ত্রণা মনে হয় বাসর রাতে কোন মেয়ে পায়নি। ফ্রেশ হয়ে প্যারা ঘরে আবার আসল। এবার চোখেমুখে লজ্জা দেখতে পাচ্ছি। আটা-ময়দা ছাড়া তো ভালই দেখাচ্ছে। গাল ফুলিয়ে বসে আছে। চোখ দিয়ে পানি ঝরবে মনে হয়। আমি বললাম ‘মিসেস প্যারা আপনাকে আটা-ময়দা ছ...