Skip to main content

এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবন। পরামর্শ ও সতর্কতা।





এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবন ও সতর্কতা

এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবন। পরামর্শ ও সর্তকতা

সামান্য জ্বর। গায়ে ব্যাথা। মাথা ঝিম ঝিম করে। বমি আসে। এমন সব উপসর্গ দেখা দিল ওমনি টুপ করে একটি এন্টিবায়োটিক ঔষধ খেয়ে নিলেন। না গেলেন ডক্টরের কাছে। না গেলেন হাসপাতালে। নিজের চিৎকিসা নিজেই করলেন।
আবার ডাক্তার আ্যন্টিবায়োটিক খেতে দিল। একটু সুস্থ বোধ করলেন। ওমনি এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবন বন্ধ করে দিলেন। কোর্স শেষ করার দরকারই মনে করলেন না।
ভাবলেন কি দরকার। সুস্থ তো হয়েই গেছি। আবার কিছু ডাক্তার আছেন। পরীক্ষা নিরীক্ষার ধারে কাছেও যান না। লিখে দেন দু তিন রকমের এন্টিবায়োটিক ঔষধ।
এ যেন অনুমানে গাছে ঢিল ছোড়া। একটা না একটায় কাজ হবেই। তাতে রোগী বাচুক বা মরুক। ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যূ হতে পারে। রোগী হত্যায় ডাক্তারের  বিচার যে হবে বা হয়েছে এমন নজির নেই।
এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবন
এ দেশে অধিকাংশ চিকিৎসকরা ধোয়া তুলসি পাতা। রোগী মেরে ফেললেও  এদের কিছু বলা মুশকিল। এক জোট হয়ে ধর্মঘট ডেকে বসে।
রোগীর তো অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। বছরে লাখ লাখ রোগী পার্শ্ববর্তী দেশে চিকিৎসার জন্য যায়। কেন যায়? দোষ কি সব সরকারের। ডাক্তারদের কি কোনই ভুমিকা নেই?
চিকিৎসার সাথে মানবতা, মানবাধিকার, মানবসেবা জড়িত। অন্য দশটা পেশার মত এটা না। অনেকেই এ বিষয়টা বেমালুম ভুলে গেছেন।
চিকিৎসকরা যতোটা সরাসরি মানবসেবা করতে পারেন। মানুষের চরম বিপদে পাশে দাড়াতে পারেন। অন্য কোন পেশার লোক এমনটা করতে পারেন না।
ব্যাকটেরিয়া,ভাইরাস,ছত্রাক এবং পরজীবীর মতো বিভিন্ন জীবানুর ক্রমবর্ধমান প্রতিরোধী অবস্থা বা আ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিষ্ট্যান্স (এএমআর) এখন সারা বিশ্বেই উদ্বেগের বিষয়।
এন্টিবায়োটিক ঔষধ যখন তখন খাওয়া যায় না। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া তো নয়ই।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অ্যান্টিবায়াটিক ব্যবহারে বিধিবদ্ধ দিক নির্দেশনা নির্ধারণ করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চিকিৎসকদের যথাসম্ভব কম এন্টিবায়োটিক ঔষধ দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে।

এন্টিবায়োটিক ঔষধ খাওয়ার আগে ভাবুন

প্রয়োজনের তুলনায় কম, অতিরিক্ত মাত্রায়, মেয়াদউর্ত্তীন আ্যান্টিবায়োটিক শরীরের মারাত্বক ক্ষতি করে।
  • বছরে বিশ্বে ৭০,০০০ লোক মৃত্যূবরণ করে রেজিষ্ট্যান্স বা আ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবানুর মাধ্যমে।
  • কোর্স শেষ না করলে রোগীর দেহে জীবানু থেকে যায়। কোনভাবে এই জীবানু অন্যদের দেহে প্রবেশ করতে পারে।
  • তখন ওই ব্যাক্তিকে একই অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া যায় না। তাকে অন্য আ্যান্টিবায়োটিক দিতে হয়। যিনি কোর্স শেষ করলেন না। তার শরীরে ওই অ্যান্টিবায়োটিক সহসা কাজ করবে না।
  • আগে সাতটা খেলে পড়ে কাজ হতো। এখন আরো বেশি খেতে হবে।
  • কারণ নির্বিচারে এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবনে রেজিস্ট্যান্স বেশি হচ্ছে। কম মাত্রায় আ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ এখন আর কাজ করছে না।
উচ্চমাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হয় ডাক্তারদের। এটা বড়ই দু:সংবাদ। গরিব মানুষ যারা তারা বেশি আ্যন্টিবায়োটিকের অপব্যবহারের শিকার হচ্ছেন।
কিছু ডাক্তার আছেন। পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই এন্টিবায়োটিক ঔষধ লিখে দেন। রোগীর ক্ষতির দিকটা মোটেই ভাবা হয় না।
অ্যান্টিবায়োটিকের অযৌক্তিক ব্যবহার এর কার্যকারীতা কমিয়ে দিচ্ছে। বাড়িয়ে দিচ্ছে মৃত্যু ঝুকি।
ফার্মেসীতে গেলেই এন্টিবায়োটিক ঔষধ কিনতে পাওয়া যায়। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র লাগে না। আবার কিছু ফার্মেসীর লোকরা নিজেরাই যেন ডক্টর। রোগীদের ওষুধ দিয়ে দেন। পুরোটাই অনুমান করে।

এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবনে পরামর্শ

আমাদের দেশের মতো মুড়ি মুড়কির মত ওষুধ বিক্রি কোথাও হয় না। কুসংস্কার আছে, এন্টিবায়োটিক ঔষধ খেলে সব রোগ ভাল হয়।
সে কারণে অনেকে কিছু না ভেবেই আ্যন্টিবায়েটিক সেবন করেন। সামান্য কারণে কিছু ডাক্তার আ্যন্টিবায়োটিক লিখে দেন।
এ জন্য অনেকে ভেবেই নেন। দু চারটা এন্টিবায়োটিক ঔষধ খেলেই রোগ মুক্তি হবে।
এটা একটা ভুল ধারণা। ভুল ওষুধ সেবন, রোগ বাড়িয়েই দিতে পারে না। মৃত্যূর কারণ হতে পারে। অনেকে আবার ওজন কমানোর উপায় হিসেবেও আ্যন্টিবায়োটিক সেবন করে। এটাও একটা মারাত্মক ভুল ধারণা।
জ্বরের সবচেয়ে কার্যকর ওষুধ প্যারাসিটামল। অথচ হরদম আমরা এন্টিবায়োটিক ঔষধ খাচ্ছি। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি বন্ধ করতে হবে।
পাশাপশি যেসব ডাক্তার পরীক্ষা না করে অনুমান করে এন্টিবায়োটিক ঔষধ দেন, তাদের বিরুদ্বেও ব্যবস্থা নিতে হবে। নিন্মমানের আ্যন্টিবায়োটিক ওষুধে বাজার সয়লাব।
এরা কারা? কোন সাহসে জনগনের স্বাস্থ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। এই অধিকার তাদের কে দিয়েছে। দ্রুত এই সব ভুইপোড় কোম্পানীর বিরুদ্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।
শুধু বড়রাই নয়। এন্টিবায়োটিক ঔষধ এর অপব্যবহারের নির্মম বলি কোমলমতি শিশুরা। রাজধানীর শিশুরা  বছরে গড়ে ১০ বারের চেয়ে বেশি অ্যান্টিবায়োটিক কোর্স সম্পন্ন করছে।
সম্প্রতি আইসিডিডিআরবি পরিচালিত এক গবেষনায় এ তথ্য উঠে এসেছে। কী ভয়ংকর ব্যাপার। এর পরিনাম কতটা ভয়াবহ আমরা বুঝতে পারছি না।
একই অ্যান্টিবায়োটিক বার বার গ্রহন করা হয়। ফলে এক সময় এই অ্যান্টিবায়োটিক আর শরীরে কাজই করবে না।
এমনটা যদি শিশুকালেই হয়। বড় হবার পরে কি হবে ভাবা যায়।
  • দেশপ্রেমী পত্র পত্রিকাগুলোর দায়িত্ব আছে। তারা এন্টিবায়োটিক ঔষধ নিয়ে আর্টিকেল প্রকাশ করতে পারে।
  • ভালো ডাক্তারদের মতামত প্রকাশ করা যেতে পারে। যাতে করে ওষুধ সেবনে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ে।
জীবন রক্ষাকারী ওষুধ জীবন বিনাশী যেন না হয়। এটাই প্রত্যাশা করি।
পাশাপশি সকলের কাছে অনুরোধ, নিজের চিকিৎসা নিজে করতে যাবেন না।
বিষ খেলে সাথে সাথে প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়। কিন্তু যাচ্ছেতাই ভাবে এন্টিবায়োটিক ঔষধ সেবনের ফলটা সাথে সাথে পাওয়া যাাবে না।
ধীরে ধীরে পাওয়া যায়। তাই ওষুধ সেবনে একটু সাবধানতা কাম্য।
------- সংগৃহীত।

Comments

Popular posts from this blog

রহস্যময় ডার্ক ম্যাটার (Dark Matter)!!

রহস্যময় ডার্ক ম্যাটার(Dark matter) ! লিখেছেন : হিমাংশু কর সেপ্টেম্বর 26, 2018 সৃষ্টিতত্ত (cosmology) ও মহাবিশ্বের দুরতম অঞ্চলগুলো সম্পর্কে আমরা খুব কমই জানতে পেরেছি।এর পেছনে সবচেয়ে বড় কারন হল আমাদের প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা।এ ছাড়াও আলোর গতির সীমাবদ্ধতার কারনেও আমরা এ সকল অঞ্চলগুলো সম্পর্কে এখনো ভাল মত জানি না।তবে আমাদের অর্জন ও কম না।আমরা ইতিমধেই আন্তঃনাক্ষত্রিক মহাকাশ অভিযান এর জন্য প্রস্তুত হতে পেরেছি।এও বা কম কি?তবে যাই হোক সে আলোচনা আর বাড়াবো না।এবার আমরা লক্ষ করব গ্যালাক্সিগুলোর দিকে।নিউটনের মহাকর্ষ বলের( gravitational force ) সুত্রগুলি যদি আমারা গ্যালাক্সিগুলোর উপর প্রয়োগ করি , তাহলে দেখা যাবে যে, গ্যালাক্সিগুলোর চারিদিকে ছরিয়ে ছিটিয়ে পরার কথা।কিন্তু আমরা জানি গ্যালাক্সি বা তারকাপুঞ্জের ভেতরের বস্তুগুল একটি কেন্দ্রিয় বিন্দুর উপর নির্ভর করে ঘুরতেছে।কারন তাদের পারস্পারিক আকর্ষণ এক ধরনের কন্দ্রাতিক(centripetal) শক্তির সৃষ্টি করে থাকে।অবাক হবার কথা হল হিসাব করে দেখা গেছে এ ধরনের ঘূর্ণন সৃষ্টি করার মত পর্যাপ্ত বস্তু এসব গ্যালাক্সিগুলোর নেই।এই ব্যাপারটি ১৯৭০ এর দশকে ওয়াশিংটন ডি...

বাঘ ও হরিণ: শিক্ষামূলক গল্

বাঘ ও হরিণ: শিক্ষামূলক গল্প - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - এক বনে ছিল এক হিংস্র বাঘ। সে যেকোনো প্রাণীকে দেখলেই ঝাপিয়ে পড়তো। কাউকে সে মানতো না। একদিন এক নিরীহ হরিণ সেই বাঘের কবলে পড়লো। হরিণটা অনেক যুদ্ধ করেও পালাতে পারলো না। বাঘ মাত্র ওকে সুবিধামতো কামড় বসাবে। এমন সময় হরিণের মাথায় একটা বুদ্ধি আসল। হরিণ বলল, “ওহে বাঘ। তুমিতো সবাইকেই খাও। আমায় না হয় ছেড়ে দাও। আমার মাংস খেলে তোমার একটুও পেট ভরবে না। তার চেয়ে বরং বিনিময়ে আমি তোমাকে অনেকগুলো গরু দিবো। তা দিয়ে এক মাস চলে যাবে তোমার।” বাঘ কথাটা শুনে ভেবে দেখল কথাটাতো মন্দ না। তাই সে হরিণটাকে ছেড়ে দিল। পরে হরিণ চলে গেল সেখান থেকে। আর বাঘ তার জন্য অপেক্ষা করতে লাগল। কিন্তু চালাক হরিণকে আর পায় কে? হরিণতো তার উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে জীবনে রক্ষা পেল। তাই গায়ের জোর না থাকলেও বুদ্ধির জোর সবচেয়ে দামি। এই গল্প থেকে আমরা অনেকগুলো শিক্ষা নিতে পারি: 1। কাউকে সহজেই বিশ্বাস করা ঠিক না। সহজেই বিশ্বাস করাটা বোকামি। 2। বিপদে পড়লে ভয় না পেয়ে বরং ভয়টাকে জয় করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। 3। গায়ের শক্তি না থাকলেও বুদ্ধির জোর দিয়ে ...

বাসর রাত- ভালোবাসার গল্প

বাসর রাত সেপ্টেম্বর 25, 2018 গল্প লিখেছেন :  কাল্পনিক বাসর ঘরে ঢুকেই নববধূকে বললাম ‘ ফ্রেশ হয়ে আস। মুখের আটা-ময়দা দেখে বলতে পারবনা তুমি চাঁদের মত সুন্দর’ নববধূ আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকাল। তারপর বলল ‘বিয়ের আগে আমাকে দেখেননি?’ আমি মুখ বাঁকা করে বললাম ‘হ্যাঁ একবার তো দেখেছিলাম কিন্তু সেদিন আরো বেশি আটা-ময়দা ছিল’ নববধূ আমার দিকে যেভাবে তাকাল মনে হচ্ছে আমাকে চিবিয়ে খাবে। তারপর খাট থেকে উঠে ফ্রেশ হতে যাবার জন্য পা বাড়াল। আমি বললাম ‘তোমার নামটা যেন কি?’ নববধূ ভেংচি দিয়ে বলল ‘বাহ মাত্র একদিনে নামটাই ভুলে গেলেন? কালকে তো মনে হয় বলবেন “এই মেয়ে তুমি এ বাড়িতে কি কর” ‘ আমি জোর স্বরে বললাম ‘নামটা জিজ্ঞেস করেছি আর এত কথা শুনিয়ে দিলে। এত বেশি কথা মেয়েদের মুখে মানায় না।’ নববধূ ‘ইরা’ বলেই ফ্রেশ হতে চলে গেল। . আমি বসেবসে হাসছি। আয়নার সামনে গিয়ে হাসছি। এরকম যন্ত্রণা মনে হয় বাসর রাতে কোন মেয়ে পায়নি। ফ্রেশ হয়ে প্যারা ঘরে আবার আসল। এবার চোখেমুখে লজ্জা দেখতে পাচ্ছি। আটা-ময়দা ছাড়া তো ভালই দেখাচ্ছে। গাল ফুলিয়ে বসে আছে। চোখ দিয়ে পানি ঝরবে মনে হয়। আমি বললাম ‘মিসেস প্যারা আপনাকে আটা-ময়দা ছ...