১. ( হারিয়ে যাওয়া ১০ মিনিট )
এক চমৎকার রৌদ্রজ্জ্বল দিনে আমেরিকার মিয়ামী বিমানবন্দর থেকে একটি বিমান বৈমানিক ও যাত্রী নিয়ে আকাশে উড়াল দেয়। নিচে কন্ট্রোল রুম থেকে রাডারের সাহায্যে বিমানটিকে পর্যবেক্ষন করছিলেন অপারেটরগন। হঠাৎ রাডার স্ক্রিন থেকে বিমান নিদের্শক বিন্দুটি অদৃশ্য হয়ে গেল। কন্ট্রোল রুমের অপারটেরগন ভয়ে শিঁউরে উঠলেন, এই বুঝি বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে গেল! চারিদিকে আতংকে হুলুস্তুল পড়ে গেল। ঠিক ১০ মিনিট পর বিমানটি আবার রাডার স্ক্রিনে ফুটে উঠলো। পরে নিউজার্সি বিমানবন্দরে সম্পূর্ন নিরাপদে অবতরন করলো বিমানটি। অপারেটরগন তাৎক্ষনিক ছুটে এসে বৈমানিককে পশ্ন করলো, তুমি ১০ মিনিট কোথায় ছিলে? বৈমানিক বেশ অবাক হলো। সে বললো প্রতিদিনের মতো স্বাভাবিকভাবেই সে এখানে পৌছেছে এবং সে ঘড়িও দেখলো যে সে ঠিক সময়েই অবতরন করেছে। এরপর যা ঘটলো তা সত্যিই আশ্চর্যের বিষয়। অপারেটরগন বললো তুমি দশ মিনিট দেরিতে পৌছেছো। বৈমানিক অবাক হলো, সে বিমানবন্দরের সকলের সাথে তার ঘড়িটি মিলিয়ে দেখলো যে সত্যিই তার ঘড়িটি ১০ মিনিট স্লো। এরপর ঐ বিমানের সকল যাত্রীদের ঘড়ি পরীক্ষা করে দেখা গেল সকলের ঘড়িই ১০ মিনিট স্লো। এখন পশ্ন হচ্ছে এই বিমানটি ১০ মিনিট কোথায় ছিল? এই বিমানে আরোহীদের জীবন থেকেও বা ১০ মিনিট কোথায় হারিয়ে গেল? উল্লেখ্য, এই কাহিনীটি অবলম্বনে পরবর্তীতে হলিউডে The X-Filesএর ৪র্থ সিজনের ১৭ তম Tempus Fugit তৈরি করা হয়েছিল।
২. (৫০ বছর পূর্বে ফিরে যাওয়া)
১৯৬১ সালের কথা, ওহিয়ো স্টেটের ঝকঝকে নীল আকাশে উড়ে চলেছে একটি বিমান। হঠাৎ নিচের দিকে তাকিয়ে পাইলট অবাক হয়ে গেলেন। ঠিক তার বিমানের নিচে উড়ছে আরেকটি বিমান। কিন্তু এমন অদ্ভূত বিমান তিনি জীবনে আগে কখনও দেখেননি। এমন বিমান যে পৃথিবীতে আছে কিনা তাও তিনি জানতেন না। বিমানটি ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কালীন সময়ের মতো কাঠ ও ত্রিপলের তৈরি। যেটি প্রায় ৫০ বছর আগেকার। ৫০ বছর আগের বিমানের বৈমানিক ৫০ বছর পরেরবিমানকে আবার ৫০ বছর পরের বৈমানিক ৫০ বছর আগের বিমানকে দেখছিলেন। এই ঘটনা দেখে বৈমানিক বিস্মিত হয়ে বিমান বন্দরে ফিরে এলেন। তিনি সকলকে তার ঘটনাটি জানালেন কিন্তু তার কথা কেউ বিশ্বাস করলো না। এমনকি সিভিল এভিয়েশন বোর্ডও বিষয়টিকে ধাপ্পা বলে উড়িয়ে দিল। বিস্মিত মনে বৈমানিক একাকিই হণ্যে হয়ে খুঁজতে লাগলেন বিমানটিকে। কারন তিনি জানেন, তিনি যা দেখেছেন তা মিথ্যা হতে পারে না। অনেক খুঁজাখুঁজির পর পাওয়া গিয়েছিল পুরোনো সেই বিমানটিকে এক গ্রামের বড় বৃক্ষের নিচে। বিমানটির সেটের উপর পড়ে থাকা লগবুকে লেখা ছিল - “Strange! A glittering silver coloured plane was flying in the sky. But who built that in this time? It seems to be a plane from 50 years later. It came to me for a crush. But, I was safe by its technics.” লগ বুকের এই লেখাটি লিখেছিলো ১৯১১ সালে জনৈক বৈমানিক। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কোথা থেকে এলো এই বিমানটি? বা ৫০ বছরের আগের বিমানকে কিভাবে বর্তমান বৈমানিক আকাশে উড়তে দেখলেন? যার উত্তর বিজ্ঞানীরা আজও খুঁজে পাননি।
৩. (আব্রাহাম লিংকনের স্বপ্নের বাস্তবতা)
স্বপ্নে ভবিষ্যতের প্রতিচ্ছবি দেখেছিলেন আমেরিকার প্রয়াত প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন। ১৮৬৫ সালের এপ্রিল মাসের ঘটনা। তিনি রাতে একটি বিচিত্র স্বপ্ন দেখেছিলেন। যে স্বপ্নটি তিনি বলেছিলেন এক জনৈক ব্যক্তির কাছে। ব্যক্তিটি তার স্বপ্নটি লিখে রেখেছিলেন এবং তা পরে বর্ননা করেছিলেন। আব্রাহাম স্বপ্নে দেখেছিলেন চারদিকে নিস্তব্ধ পরিবেশের মধ্য থেকে কান্নার সুর শোনা যাচ্ছে। সে কান্নার কারণ খুঁজতে তিনি বিছানা থেকে উঠে গেলেন কিন্তু দেখলেন কোথাও কেউ নেই শুধু কান্নার শব্দ শোনা যাচ্ছে। তিনি হোয়াইট হাউজের মধ্যে হেটে হেটে কান্নার শব্দের উৎস খুঁজতে লাগলেন। অবশেষে হোয়াইট হাউজের পূর্ব ব্লকের ঘরে আবিস্কার করলেন একটি মৃতদেহ। মৃতদেহের চারপাশ ঘিরে শোক পালনকারীরা কান্নাকাটি করছে কিন্তু তাদের সকলের মুখ কালো কাপড়ে ঢাকা। সৈন্যরা দাড়িয়ে আছে বিষন্ন চেহারায়। তিনি সামনে এগিয়ে গেলেন এবং একজনকে প্রশ্ন করলেন কে মারা গিয়েছে? সে উত্তর দিল- আমাদের প্রেসিডেন্ট, তিনি হত্যাকারীদের হাতে নিহত হয়েছেন।
এই স্বপ্ন দেখার ঠিক পাঁচ দিন পর সত্যিসত্যিই হত্যাকারীর হাতে নিহত হয়েছিলেন আব্রাহাম লিংকন। এবং তার স্বপ্ন দেখা হোয়াইট হাউজের পূর্ব ব্লকেই কিছু সময়ের জন্য রাখা হয়েছিল তার লাশ।
এরকম আরও পড়তে আমাদের সাথেই থাকুন।
Comments
Post a Comment