Skip to main content

মানব মনঃ হাজার রহস্যের এক ধূম্রজাল!



মানব মন: হাজার রহস্যের এক ধুম্রজাল!

নিজের সম্পর্কে আমরা কতটুকু জানি শিরোনামে একটি লেখা কিছুদিন আগেই প্রকাশিত হয়েছিল। লিখার পরে দেখা গেলো এখনও অনেক কিছুই লিখা বাকি রয়েছে। এক, দুই বা কয়েকশ পর্বেও মানব মন বা মানুষ সম্পর্কে লিখে শেষ করা যাবে না। মানব মন হচ্ছে হাজার রহস্যের এক ধুম্রজাল। তার পরতে পরতে লুকিয়ে আছে সিন্ধুসম রহস্য। আর এই রহস্যের কুলকিনারা করতে বিজ্ঞানীরা নিরলস পরিশ্রম করে আসছেন। হিউম্যান বিহ্যাভিয়ারের সব জটিলতার যাবতীয় মীমাংসা এখনো শেষ না হলেও, ঘোর অমানিশা ম্লান হয়ে ক্রমেই যাবতীয় রহস্য আসার আলো দেখছে। গত পর্বের পর আজ তেমন কিছু বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করবো, যা আমাদের নিজেদের আছে, অথচ আমরা জানিনা!


আমাদের মনোজগত নানা বিক্ষিপ্ত ভাবনায় ভরা থাকে

  • আমরা মন থেকেই ভুলের উপলব্ধি করতে পারি

প্রতিদিন আমরা কতই না ভুল করি। দিনশেষে আবার সেই ভুলের অনুশোচনা ও করি। আসলে আ্মরা সবাই জানি যে আমরা নিজেরা কতটুকু ভালো কিংবা কতটুকু খারাপ! এছাড়া মানব মনের একটা সহজাত দিক হচ্ছে আমরা সহজেই অন্যের দুঃখে কাতর হই, সহানুভূতিশীল হই। কিন্তু কেন আমরা এ ধরণের আচরণ করি তার উত্তর অজানা ছিলো। মনোবিজ্ঞানীরা এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন বহুবছর ধরে।
১৯৬১ সালে বিখ্যাত মনোবিজ্ঞানী স্টেনলি মিলগ্রাম একটা রিসার্চ করেন যা বেশ বিখ্যাত ছিলো। তার রিসার্চ টি ছিলো এরকম যে, একজন মানুষকে যদি অন্য কারো ক্ষতি করতে বলা হয়, সেক্ষত্রে সে কর্তৃপক্ষের কথা কতখানি মান্য করবে! এবং সেক্ষেত্রে তার ব্যক্তিগত নৈতিকতা আর দায়িত্ব পালনের বাধ্যবাধকতার মধ্যেকার দ্বন্দ কতখানি তীব্র হবে। ব্যাপারটা একটু সহজ করে বলি।


আমরা মন থেকেই ভুলের উপলব্ধি করতে পারি
আমরা মন থেকেই ভুলের উপলব্ধি করতে পারি

ধরুণ আপনার বস আপনাকে একটি মানুষকে খুন করতে বললো অথবা অন্যায়ভাবে নির্যাতন করতে বলল। এক্ষেত্রে আপনি আপনার বসের কথা কতখানি মান্য করবেন! এছাড়া ধরুন আপনি আপনার বসের কথামত কাউকে নির্যাতন করছেন। কিন্তু তা কি পুরোটাই আদেশ অনুযায়ী করছেন, নাকি আপনার মন ও আপনাকে এ অনৈতিক কাজে সায় দিচ্ছে! এই যে আপনার বসের আদেশ এবং আপনার মনের ভিতরকার যে ইচ্ছা, তাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের সমীকরণ খোঁজার জন্য স্টেনলি এই রিসার্চ টি করেছিলেন।
এক্ষেত্রে স্ট্যানলি নাজি যুদ্ধটিকে বেছে নিয়েছিলেন। তিনি অবাক হয়েছিলেন কিভাবে যুদ্ধাপরাধীরা হিটলারের আদেশে ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে! নাজি যুদ্ধের সময় কিভাবে অপরাধীরা গণ হত্যাকান্ডের সময় নীরব থাকতে পেরেছেন, মিলগ্রাম সেই বিষয়ের উপর ও সূক্ষ্ন দৃষ্টিপাত করতে চেয়েছেন। এই পরীক্ষার জন্য তিনি দুইজন মানুষকে কাজে লাগালেন।
একজন ছিলেন শিক্ষকের ভুমিকায় আর অন্যজন ছিলেন ছাত্রের ভুমিকায়। ছাত্রদের জন্য এমন এক পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হলো যেখানে তাদের বৈদ্যুতিক শক দেয়া হবে এবং সেটার তদারকি করবেন শিক্ষকরা। তবে এখানে ছাত্রদের সত্যি সত্যি শক দেয়া হয়নি। বরং তাদের অন্য একটি রুমে নিয়ে রাখা হলো। মিলগ্রাম এমন একটি অডিও রেকর্ডিং চালু করে দিলেন যেটা শুনে মনে হচ্ছিলো যে, অপর পাশের ছাত্রটি বৈদ্যুতিক শক খেয়ে যন্ত্রণার কাতরাচ্ছে। যদি শিক্ষক সেটা শুনে ছাত্রের কষ্ট কমানোর জন্য শক দেয়া বন্ধ করে দিতে চাইতেন তবে পরীক্ষক (মিলগ্রাম) তাকে খোঁচা দিয়ে কাজ চালানোর সংকেত দিতেন। ফলাফলে মিলগ্রাম দেখতে পেলেন এই পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষকের ভুমিকায় থাকা ৬৫% ব্যক্তি খুব যন্ত্রণাদায়ক আর অস্বস্তিকর পরিস্থিতি কাটিয়েছেন। যা অনেকটা হিটলারের অনুসারীদেরকেই নির্দেশ করে। শিক্ষকরা যেমন চাইলেই তার ছাত্রের নির্যাতন বন্ধ করতে পারেনি, ঠিক তেমনি নাযি যুদ্ধের যুদ্ধাপরাধীরাও হিটলারের কথার বিরুদ্ধে যেতে পারেনি।
"অন্যের প্রতি দয়াশীল হওয়া, সহানুভূতিশীল হওয়া, একই গ্রুপের অন্য সদস্যদের প্রতি কিছুটা মমত্ববোধ মানুষের নৈতিকতার মধ্যে পড়ে। এমনকি বিদেশিদের সম্বন্ধে অহেতুক ভয় পাওয়া, উপজাতিদের উপর অন্যায়ভাবে নির্যাতন করা, নিষ্ঠুর আচরণ করা ও কিছুটা এই স্বভাবের অন্তর্ভুক্ত"
বৈদ্যুতিক শকের ওই পরীক্ষা যে আদেশের অন্ধ অনুকরণ এর কথা বলে তা কিন্তু না, এটি বুঝায় যে নৈতিকতার বিরোধিতা মানব মনের গভীর থেকে আসে।
  • আমরা সহজেই সামাজিক হই, বিবাদে জড়াই আবার সমস্যা সমাধানে এক হতে পছন্দ করি।

অতি সম্প্রতি বলিউড রাজ করা সিনেমার নাম "টাইগার জিন্দা হ্যায়"। হয়তো ভাবছেন এখানে আবার সিনেমার কথা কেন! যদি আপনি সিনেমাটি দেখে থাকেন, তবে নিশ্চইয় খেয়াল করেছেন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রথমে ভারতের র (RAW)আর পাকিস্তানের আইএসআই (ISI) একত্রে অপারেশন করতে রাজি হয়নি। কিন্তু ঠিক সেই মুহুর্তে যখন গুলির আওয়াজ শুনল তখন র আর আইএসআই একসাথেই শত্রুর দিকে বন্দুক তাক করলো। আসলে এটাই মানুষের সামাজিক আচরণের অন্যতম প্রধান রহস্য। আমরা সহজেই কোন একটা  সামাজিক গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ি। সেই গোষ্ঠীর স্বার্থে অনেক কাজ করি। দিনশেষে আমরা শুধু আমাদের নিজস্ব সামাজিক গোষ্ঠীর কথাই চিন্তা করি। এতে অন্য কোন সামাজিক গোষ্ঠীর নিন্দা করতেও পিছ পা হইনা। কিন্তু যখন সামগ্রিকভাবে আমরা সবাই বিপদে পড়ি, তখন আবার সব সামাজিক গোষ্ঠীর সদস্যরা এক হয়ে সেই বিপদের মোকাবিলা করি।
১৯৫০ সালের দিকের ঘটনা। সামাজিক মনোবিজ্ঞানের উপর তখন  একটা পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষার মাধ্যেমে সামাজিকভাবে দলভুক্ত মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্ব-কলহের কারণ এবং সেগুলো থেকে বের হয়ে আবার মিলেমিশে থাকার উপায় নিয়ে বিস্তর গবেষণা করা হয়েছিলো। সেই গবেষণায় এক নতুন রহস্যের দাঁড় উন্মোচিত হয়েছিলো।


আমরা সহজেই আলাদা হই
আমরা সহজেই আলাদা হই

এই পরীক্ষণের দলনেতা ছিলেন মুজাফর শেরিফ। তিনি ওকলাহোমার রোবার কেইভ স্টেট পার্কে ১১ বছর বয়সী ১১ জন বালকের দুইটি দল কে গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পে পাঠালেন। দল দুইটির নাম ছিলো ঈগল এবং র‍্যাটলার। দুইটি দলই এক সপ্তাহ সেই পার্কে ছিলো। সবাই হাসিঠাট্টায় খুব সুন্দর সাতটি দিন কাটিয়েছে। মজার ব্যাপার হলো, সেই সাতদিনে একটা দল অন্য দলের সম্পর্কে কিছুই জানতে পারে নি। এমনকি এটাও না যে, তারা বাদেও অন্য একটা দল এই পার্কে আছে। যখন দুইটা দলকে একত্রে রাখার ব্যবস্থা করা হলো, সবাই তার দলের মানুষকেই খুঁজতে লাগলো। বিরোধ আরো গাঢ় হলো যখন তাদের মধ্যে নানা রকমের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এক দলের সদস্য অন্য দলের সাথে একসাথে বসে খেতে পর্যন্ত চাইতো না।
পরবর্তী প্রদক্ষেপ হিসেবে শেরিফ দুইদলের সদস্যদের মধ্যে মিলবন্ধন ঘটাতে চাইলেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি সকলের একসাথে অবসর যাপনের ব্যবস্থা করলেন। কিন্তু এই পদ্ধতিও আলোর মুখ দেখেনি। দুই দলের মধ্যে কেউ কারো মুখ পর্যন্ত দেখতে চাইতো না। এরপর তিনি সবাইকে মিলে একটা সমস্যা সমাধানের জন্য দিলেন যেটা শেষ পর্যন্ত এই বিরোধের খানিকটা মিমাংসা করতে সক্ষম হয়েছে। প্রশ্ন উঠতে পারে কিভাবে! হ্যাঁ, যখন তাদের দুইদলকেই একধরণের সমস্যা সমাধান করতে দেয়া হলো। তখন সবকিছু ভুলে ওরা একসাথে কাজ করতে লাগলো এবং সেই সমস্যার সমাধান ও করে ফেললো!


আমরা সহজেই সামাজিক হই
আমরা সহজেই সামাজিক হই

তো যা বলছিলাম, এভাবেই মানুষ বেঁচে থাকে। খুব সহজেই আমরা বন্ধু বানাই। আবার যখন সমস্যার সম্মুখীন হই, তখন শত্রুর সাথে মিলেমিশে কাজ করতেও পিছপা হইনা। এজন্যই হয়তো বলা হয় দরকার পড়লে "বাঘে মহিষেও এক ঘাটে জল খায়"।
  • শক্তিশালী আত্মসম্মান ও মর্যাদাবোধ আমাদের বেঁচে থাকার রসদ যোগায়।

যশ এবং খ্যাতি অর্জন করা মানে যে শুধুই মানুষের অহংকার বাড়ানো তা কিন্তু নয়। এটা মানুষের দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার চাবি কাঠিও হতে পারে। আমরা আমাদের আশপাশে একটু গভীরভাবে দেখলেই এই সত্যটি উপলব্ধি করতে পারবো। আমাদের ঘরে-বাইরে, এমনকি আমাদের ক্লাসেও এই সত্যটি বহাল তবিয়তে প্রতিষ্ঠিত।
আপনি দেখে থাকবেন, ক্লাসে যারা পড়াশোনা বেশি পারে কিংবা যারা স্যারদের প্রিয় পাত্র, তারা খুব একটা ক্লাস মিস দেয় না। এমনকি ক্লাসে তারা পেছনের সারির ছাত্রছাত্রীদের চেয়ে বেশি মনোযোগী, বেশি উৎসাহী এবং তুলনামূলক বেশি কর্মতৎপর। আমাদের সমাজের দিকেও লক্ষ করলে দেখে থাকবেন, যাদের আত্মসম্মানবোধ এবং সবার কাছে আলাদা একটা গ্রহনযোগ্যতা থাকে তারাই বেশ উদ্যমী জীবনযাপন করে থাকে।


শক্তিশালী আত্মসম্মান ও মর্যাদাবোধ আমাদের বেঁচে থাকার রসদ যোগায়
শক্তিশালী আত্মসম্মান ও মর্যাদাবোধ আমাদের বেঁচে থাকার রসদ যোগায়

Toronto’s Sunnybrook ও Women’s College Health Sciences Centre found  এই বিষয়ে একটি গবেষণা করে। গবেষণায় দেখা যায় যে, যেসব অভিনেতা-অভিনেত্রী আর পরিচালকবৃন্দ একাডেমিক অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন তারা সেইসব অভিনেতা-পরিচালকদের তুলনায় বেশিদিন বেঁচে থেকেছেন, যারা মনোনয়ন পেয়েছেন কিন্তু পুরষ্কৃত হননি। এই পরীক্ষার প্রধান দলনেতা ডোনাল্ড রিডেইলমেনার ABC নিউজকে জানান যে,
"আমরা এটা বলছি না যে আপনি একাডেমী এওয়ার্ড পেলেই বেশীদিন বাঁচবেন। আমাদের গবেষণার মূলকথা হচ্ছে সামাজিক এই ব্যাপারগুলোও গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের ভিতরকার আত্মতৃপ্তি, মূল্যবোধ এসব সুস্বাস্থ্যর ক্ষেত্রে অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে"।
সুতরাং জীবনটাই আনন্দের সাথে কাটিয়ে দেয়ার জন্য আত্নমর্যাদা এবং যশ-খ্যাতির কোন তুলনা হয়না। খ্যাতির বিড়ম্বনা বলেও যদি একটি কথা আছে। তবুও কজনই বা এই সৌভাগ্য লাভ করে!
  • আমরা আমাদের অভিজ্ঞতাকে সবসময় বড় করে দেখার চেষ্টা করি

শিরোনাম থেকে তেমন কিছুই বুঝা না গেলেও বিষয়টা অসাধারণ। একটু খুলে বলি তাহলে, আমাদের মনোজগতের একটি অন্যতম বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আমরা নিজেদের কে অন্যদের চাইতে বড় করে দেখার এক অদ্ভুত প্রবণতা নিয়ে জন্মেছি। পার্থিব কোনো কিছুতেই আমরা হার মানতে চাইনা। এমনকি কর্মক্ষেত্রে আমাদের কাজের পরিসর ক্ষুদ্র হলেও আমরা অন্যকে বলে বেড়াই যে সব ক্ষমতা আমার হাতে! নতুন চাকরিতে গেলে আমরা সেখানকার সবাইকে আগের চাকরির মিথ্যে সুখস্মৃতিচারণ করতে বেজায় ভালবাসি। এরূপ বহু উদাহরণ আছে আমাদের আশেপাশে।


নিজের অবস্থানে সবসময় নিজেকে বড় আর সঠিক ভাবার চেষ্টা করি

যেমন, আমার এক বন্ধু আছে, যে আমার বাসায় এসে আমাদের বুয়ার অসাধারণ রান্না দেখে ওদের বুয়ার বিচ্ছিরি রান্নার প্রশংসা করতে ভুলে না। এটা আসলে দোষ না, স্বভাব 🙂
সাইকোলজির ছাত্রছাত্রীরা এই বিষয়ে আগে থেকেই হয়তো জানেন। আসলে সাইকোলজি কোর্সের প্রথম দিকেই এ তত্ত্বটি পড়ানো হয়। এটি এমন একটা তত্ত্ব যা মানুষের মনস্তত্ত্বীয় বিরোধ এবং মতবিরোধ সম্পর্কে আলোকপাত করে। ১৯৫৯ সালে সাইকোলজিস্ট লিওন ফেস্টিঙ্গার এর করা পরীক্ষাটি এই তত্ত্বের উপর একটা  প্রকৃষ্ট পরীক্ষামূলক উদাহরণ।
পরীক্ষণে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেককে লিওন কিছু একঘেঁয়ে মানে বোরিং কাজ করতে বললেন। যেমন, কাঠের গাটের মধ্যে রেখে খুটিকে এক ঘন্টা ধরে বাঁকাতে হবে। তো এই বিরক্তিকর কাজটি করার পর তাদের মধ্যে কয়েকজনকে ১ ডলার এবং কয়েকজনকে ২০ ডলার করে দেয়া হলো। আর এই ডলারের বিনিময়ে তারা যেসব রিসার্চাররা দাঁড়িয়ে ছিলেন তাদের কাছে এই কাজটিকে আকর্ষনীয় বলে মিথ্যে গল্প করবে।
পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যাদের ১ ডলার দেয়া হয়েছিলো তারা কাজটিকে অনেক বেশি উপভোগ্য বলে দাবী করেছে। আর যাদের ২০ ডলার দেয়া হয়েছে, তারা তুলনামুলক কম উপভোগ্য বলেছে। এর থেকে কি বুঝা যায়? যাদের বেশি টাকা দেয়া হয়েছে, তারা এমন ভেবেছেন যে ১ ঘন্টা ধরে বেকার খাটার জন্য তারা যথার্থ মূল্য পেয়েছেন। কিন্তু যারা মাত্র ১ ডলার পেয়েছেন, তারা মিথ্যে বলে তাদের অতিবাহিত সময়টাকে আরো একবার বিচার করে দেখতে চাচ্ছিলেন। এভাবে যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তাদের কাঙ্খিত সন্তুষ্টি লেভেলে পৌঁছতে না পারবে ততক্ষণ পর্যন্ত কাঠ বাঁকা করার কাজের অভিজ্ঞতাকে বিচার করতে থাকবে।
তাহলে উপরোক্ত আলোচনা থেকে আসলে আমরা কি বুঝতে পারলাম? মূলত আমাদের কাটানো সময়গুলো কে কিংবা অর্জিত অভিজ্ঞতার ভান্ডারকে আমরা সবসময়েই একটা মহিমান্বিত আসন দিতে পছন্দ করি। সোজা কথায় বলতে গেলে এই পৃথিবীকে সুন্দর আর যৌক্তিক জায়গা বলে প্রমাণ করার জন্য আমরা অনেক সময় নিজেকেই মিথ্যা বলি। ব্যাপার টা কেমন না! অথচ আমরা এটাই করি।
আজকে এই পর্যন্তই। পরবর্তীতে আবার কথা হবে মানব মনের অজানা কোন রহস্যজট নিয়ে। ততক্ষণ পর্যন্ত আপনাদের জন্য এই মজার ভিডিওটি 
-----------Collected.
🙂
রেফারেন্সঃ
  1. https://www.huffingtonpost.com/2013/10/18/20-psychological-studies-_n_4098779.html
  2. https://iiimywayiii.wordpress.com/2015/03/23/we-can-experience-deeply-conflicting-moral-impulses/
  3. https://english-teacher.moscow/we-seek-out-loyalty-to-social-groups-and-are-easily-drawn-to-intergroup-conflict/

লিখাটি নিয়ে আপনার অভিমত কি?

Popular posts from this blog

রহস্যময় ডার্ক ম্যাটার (Dark Matter)!!

রহস্যময় ডার্ক ম্যাটার(Dark matter) ! লিখেছেন : হিমাংশু কর সেপ্টেম্বর 26, 2018 সৃষ্টিতত্ত (cosmology) ও মহাবিশ্বের দুরতম অঞ্চলগুলো সম্পর্কে আমরা খুব কমই জানতে পেরেছি।এর পেছনে সবচেয়ে বড় কারন হল আমাদের প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা।এ ছাড়াও আলোর গতির সীমাবদ্ধতার কারনেও আমরা এ সকল অঞ্চলগুলো সম্পর্কে এখনো ভাল মত জানি না।তবে আমাদের অর্জন ও কম না।আমরা ইতিমধেই আন্তঃনাক্ষত্রিক মহাকাশ অভিযান এর জন্য প্রস্তুত হতে পেরেছি।এও বা কম কি?তবে যাই হোক সে আলোচনা আর বাড়াবো না।এবার আমরা লক্ষ করব গ্যালাক্সিগুলোর দিকে।নিউটনের মহাকর্ষ বলের( gravitational force ) সুত্রগুলি যদি আমারা গ্যালাক্সিগুলোর উপর প্রয়োগ করি , তাহলে দেখা যাবে যে, গ্যালাক্সিগুলোর চারিদিকে ছরিয়ে ছিটিয়ে পরার কথা।কিন্তু আমরা জানি গ্যালাক্সি বা তারকাপুঞ্জের ভেতরের বস্তুগুল একটি কেন্দ্রিয় বিন্দুর উপর নির্ভর করে ঘুরতেছে।কারন তাদের পারস্পারিক আকর্ষণ এক ধরনের কন্দ্রাতিক(centripetal) শক্তির সৃষ্টি করে থাকে।অবাক হবার কথা হল হিসাব করে দেখা গেছে এ ধরনের ঘূর্ণন সৃষ্টি করার মত পর্যাপ্ত বস্তু এসব গ্যালাক্সিগুলোর নেই।এই ব্যাপারটি ১৯৭০ এর দশকে ওয়াশিংটন ডি...

বাঘ ও হরিণ: শিক্ষামূলক গল্

বাঘ ও হরিণ: শিক্ষামূলক গল্প - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - এক বনে ছিল এক হিংস্র বাঘ। সে যেকোনো প্রাণীকে দেখলেই ঝাপিয়ে পড়তো। কাউকে সে মানতো না। একদিন এক নিরীহ হরিণ সেই বাঘের কবলে পড়লো। হরিণটা অনেক যুদ্ধ করেও পালাতে পারলো না। বাঘ মাত্র ওকে সুবিধামতো কামড় বসাবে। এমন সময় হরিণের মাথায় একটা বুদ্ধি আসল। হরিণ বলল, “ওহে বাঘ। তুমিতো সবাইকেই খাও। আমায় না হয় ছেড়ে দাও। আমার মাংস খেলে তোমার একটুও পেট ভরবে না। তার চেয়ে বরং বিনিময়ে আমি তোমাকে অনেকগুলো গরু দিবো। তা দিয়ে এক মাস চলে যাবে তোমার।” বাঘ কথাটা শুনে ভেবে দেখল কথাটাতো মন্দ না। তাই সে হরিণটাকে ছেড়ে দিল। পরে হরিণ চলে গেল সেখান থেকে। আর বাঘ তার জন্য অপেক্ষা করতে লাগল। কিন্তু চালাক হরিণকে আর পায় কে? হরিণতো তার উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে জীবনে রক্ষা পেল। তাই গায়ের জোর না থাকলেও বুদ্ধির জোর সবচেয়ে দামি। এই গল্প থেকে আমরা অনেকগুলো শিক্ষা নিতে পারি: 1। কাউকে সহজেই বিশ্বাস করা ঠিক না। সহজেই বিশ্বাস করাটা বোকামি। 2। বিপদে পড়লে ভয় না পেয়ে বরং ভয়টাকে জয় করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। 3। গায়ের শক্তি না থাকলেও বুদ্ধির জোর দিয়ে ...

বাসর রাত- ভালোবাসার গল্প

বাসর রাত সেপ্টেম্বর 25, 2018 গল্প লিখেছেন :  কাল্পনিক বাসর ঘরে ঢুকেই নববধূকে বললাম ‘ ফ্রেশ হয়ে আস। মুখের আটা-ময়দা দেখে বলতে পারবনা তুমি চাঁদের মত সুন্দর’ নববধূ আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকাল। তারপর বলল ‘বিয়ের আগে আমাকে দেখেননি?’ আমি মুখ বাঁকা করে বললাম ‘হ্যাঁ একবার তো দেখেছিলাম কিন্তু সেদিন আরো বেশি আটা-ময়দা ছিল’ নববধূ আমার দিকে যেভাবে তাকাল মনে হচ্ছে আমাকে চিবিয়ে খাবে। তারপর খাট থেকে উঠে ফ্রেশ হতে যাবার জন্য পা বাড়াল। আমি বললাম ‘তোমার নামটা যেন কি?’ নববধূ ভেংচি দিয়ে বলল ‘বাহ মাত্র একদিনে নামটাই ভুলে গেলেন? কালকে তো মনে হয় বলবেন “এই মেয়ে তুমি এ বাড়িতে কি কর” ‘ আমি জোর স্বরে বললাম ‘নামটা জিজ্ঞেস করেছি আর এত কথা শুনিয়ে দিলে। এত বেশি কথা মেয়েদের মুখে মানায় না।’ নববধূ ‘ইরা’ বলেই ফ্রেশ হতে চলে গেল। . আমি বসেবসে হাসছি। আয়নার সামনে গিয়ে হাসছি। এরকম যন্ত্রণা মনে হয় বাসর রাতে কোন মেয়ে পায়নি। ফ্রেশ হয়ে প্যারা ঘরে আবার আসল। এবার চোখেমুখে লজ্জা দেখতে পাচ্ছি। আটা-ময়দা ছাড়া তো ভালই দেখাচ্ছে। গাল ফুলিয়ে বসে আছে। চোখ দিয়ে পানি ঝরবে মনে হয়। আমি বললাম ‘মিসেস প্যারা আপনাকে আটা-ময়দা ছ...